সারাদেশ

নকলায় যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বিএনপি কর্মীর মৃত্যু

প্রিন্ট
নকলায় যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বিএনপি কর্মীর মৃত্যু

প্রকাশিত : ২৯ অক্টোবর ২০২৫

শেরপুরের নকলা উপজেলায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে এসে বাদশা মিয়া (৪৮) নামের এক বিএনপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পৌরশহরের কাচারী মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

মৃত বাদশা মিয়া উপজেলার উরফা দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত ছফর উদ্দিনের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়ভাবে বিএনপির একজন নিবেদিতপ্রাণ ও সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা যুবদলের উদ্যোগে নকলা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সংগঠনের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও আনন্দ র‌্যালির আয়োজন করা হয়। বাদশা মিয়া মিছিলসহ ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তবে অনুষ্ঠানস্থলে হঠাৎ তিনি অসুস্থতা অনুভব করলে দ্রুত সভাস্থল ত্যাগ করেন। কিছু দূর এগিয়ে কাচারী মসজিদের সামনে তিনি রাস্তার পাশে হঠাৎ পড়ে যান।

স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মালিহা নুঝাত তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকের প্রাথমিক ধারণা, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।

বাদশা মিয়ার মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। খবর পেয়ে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা হাসপাতালে ছুটে যান। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আলহাজ্ব খোরশেদুর রহমান, সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুল হক দুলাল, যুগ্ম আহ্বায়ক মহিউদ্দিন মুক্তার, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শফিউল আলম পলাশসহ দলের অসংখ্য নেতাকর্মী।

নেতৃবৃন্দ মরহুম বাদশা মিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

এদিকে যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়ে একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মীর মৃত্যুতে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে শোক ও আবেগঘন পরিবেশ বিরাজ করছে।

চৌদ্দগ্রামে সামাজিক শালিস-বৈঠকে দুবাই প্রবাসীর ওপর হামলা, থানায় মামলা  চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে সামাজিক শালিস-বৈঠকে মমিনুল ইসলাম মজুমদার নামে এক দুবাই প্রবাসীর উপর ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হন ওই প্রবাসী। পরে স্থানীয়রা তাকে হামলাকারীদের থেকে উদ্ধার করে প্রথমে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তার অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানেও তিনি সেখানে চিকিৎসাধিন রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার সকালে উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের পাইকোটা মজুমদার বাড়িতে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগি প্রবাসীর স্ত্রী ফাতেমা বেগম থানায় এজাহার দায়ের করেন। এ ঘটনায় থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে শাহআলম মজুমদার নামে একজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে বয়স বিবেচনায় মুছলেকা নিয়ে তাকে স্থানীয় গণ্যমান্য লোকদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন চৌদ্দগ্রাম থানার পরিদর্শক মো. গুলজার আলম।  থানায় দায়েরকৃত এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জান গেছে, দুবাইয়ে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের মো. শাহআলম মজুমদারের পরিবার ও ভুক্তভোগি প্রবাসী মমিনুল ইসলাম মজুমদারের পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছিল। সম্প্রতি শাহআলমের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মাদক সেবন, সামাজিক সিদ্ধান্ত অমান্য করা সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে অশোভন আচরণের অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগ নিয়ে মীমাংশার উদ্দেশ্যে শনিবার সকালে গ্রামে একটি শালিস-বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক চলাকালে শাহআলমের ছোট ছেলে নাঈম গ্রাম্য সর্দারদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করে। এ সময় সে তাদেরকে দেখে নেওয়ার হুমকি-ধমকি দেয়। প্রতিবাদে প্রবাসী মমিনুল ইসলাম তাকে এমন অশোভন আচরণ থেকে বিরত থাকতে বলে। এতে নাঈম ক্ষিপ্ত হয়ে তার অপর দুই ভাই সোহাগ ও মাইন উদ্দিনসহ তাদের আরো কয়েকজন সহযোগী দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে মমিনুলের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা মমিনুলকে উদ্ধার করে প্রথমে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি ঘটলে পরে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হামলার পরপরই শাহআলমের তিন ছেলে ও হামলাকারী আত্মীয়-স্বজনরা নিজ গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শাহআলমকে আটক করে। এক ঘণ্টা পর স্থানীয় একজনের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।  প্রবাসী মমিনুল ইসলামের পরিবার জানায়, কয়েক বছর আগে নাঈমকে দুবাইয়ে কাজের সুযোগ দিয়েছিলেন মমিনুল। সেখানে দোকানে কাজ করার সময় নাঈম কয়েক ভরি স্বর্ণ চুরি করে পালানোর চেষ্টা করলে মমিনুল অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে স্বর্ণ ফেরত দিয়ে সেখানেই বিষয়টির মীমাংশা করা হয়। এতে শাহআলমের পরিবার মমিনুলের পরিবারের উপর ক্ষুব্ধ হয়। কিছুদিন আগে মমিনুল ইসলাম দেশে আসলে বিষয়টি নতুন করে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ সময় শাহআলমের পরিবার মমিনুলকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। এ ঘটনার জের দিনদিন বাড়ছিলো। বিষয়টি নিয়ে শনিবারে শালিস অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে শাহআলমের ছেলে নাঈমের অশোভন আচরণের প্রতিবাদ করায় তারা পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী মমিনুলের উপর হামলা করে। মমিনুলের পরিবারের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবেই শনিবারের শালিস  বৈঠকের সময় তাকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। আমরা এ হামলায় জড়িতদের দ্রæত আইনের আওতায় এনে তাদের বিচার নিশ্চিতের জোর দাবি জানাচ্ছি। এর আগে অভিযুক্ত নাঈম কর্তৃক হুমকি-ধমকির ঘটনায় গত বুধবার ভুক্তভোগি প্রবাসী মমিনুল ইসলাম জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন।  এ বিষয়ে প্রধান অভিযুক্ত শাহআলম বলেন, বিদেশে আমার ছেলে নাঈমের সাথে ভিসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ওইদিন বিচার বসে। মমিনুল আমার ছেলের সাথে অন্যায় করেছে। সমাধান হওয়ার একপর্যায়ে সে আমাদেরকে হুমকি দিলে আমরা তার উপর হামলা করতে বাধ্য হই। এখন তারা আইনের আশ্রয় নিয়েছে। আমি আইনীভাবে তা মোকাবেলা করবো। সামাজিকভাবে মীমাংশার জন্য আমি প্রস্তুত।  চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিলাল উদ্দিন বলেন, সামাজিক শালিসে প্রবাসীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আটক শাহআলমকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, শাহআলম বয়োবৃদ্ধ একজন মানুষ। তিনি প্রস্রাবে ইনফেকশন জনিত সমস্যাসহ শারীরিক নানান সমস্যায় ভুগছেন। মানবিক দিক বিবেচনায় স্থানীয় একজনের জিম্মায় তাকে সাময়িকভাবে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।