খুলনা

বিএনপি'র মনোনয়ন প্রত্যাশী অ্যাড, অসীম কুমার মণ্ডল শ্যামনগরের বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন

প্রিন্ট
বিএনপি'র মনোনয়ন প্রত্যাশী অ্যাড, অসীম কুমার মণ্ডল শ্যামনগরের বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন

প্রকাশিত : ০১ অক্টোবর ২০২৫

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা। এখানে ধর্মীয় সম্প্রীতির ইতিহাস যেমন প্রাচীন, তেমনি আজও পূজা-পার্বণে গ্রামীণ জনজীবনে উচ্ছ্বাস ভরপুর। এমন সময়ে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর '২৫)  সাতক্ষীরা-৪ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ঐক্যফ্রন্ট সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি এবং সাতক্ষীরা আদালতের জিপি অ্যাডভোকেট অসীম কুমার মণ্ডল শ্যামনগরের বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন।

পরিদর্শনকালে তিনি স্থানীয় পূজার আয়োজক, সাধারণ পূণ্যার্থী ও খেটে খাওয়া মেহনতী মানুষের সাথে কুশল বিনিময় করেন। তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা।

স্থানীয় ব্যবসায়ী রবীন্দ্রনাথ গাইন বলেন, “আমরা হিন্দুরা সবসময় উৎসবকে ঘিরে আনন্দ করি। কিন্তু এখনকার সময়টা খুব কঠিন। অসীম বাবু আজ এখানে এসেছেন, আমাদের খোঁজ নিয়েছেন। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় সম্মানের বিষয়।”

কৃষক বলেন সুবল দাশ,  “এই এলাকার মানুষ নদীভাঙন আর লবণাক্ততায় অনেক কষ্টে আছে। চাষবাস করা কঠিন হয়ে গেছে। তারপরও পূজায় আমরা মিলেমিশে আনন্দ করি। অসীম বাবু আমাদের সমস্যার কথা শুনলেন। যদি তিনি নির্বাচিত হন, আশা করি আমাদের দুঃখ-কষ্ট দূর করতে কাজ করবেন।”

গৃহিণী শিখা রানী জানান, “আমরা মেয়েরা পূজা-পার্বণে আনন্দ করি ঠিকই, কিন্তু ঘরে দারিদ্র্য থাকলে আনন্দ অসম্পূর্ণ থাকে। অসীম বাবু আমাদের বললেন, নারীদের ক্ষমতায়ন ও কর্মসংস্থানের বিষয়ে তিনি কাজ করবেন। এটা শুনে ভালো লাগলো।”

কলেজ ছাত্র অমরেশ বিশ্বাস বলেন, “আমরা তরুণরা চাই সমাজে শান্তি, কর্মসংস্থান আর সুষ্ঠু পরিবেশ। রাজনীতিবিদরা আমাদের পাশে দাঁড়ালে আমরা আরও উৎসাহ পাই। অসীম কুমার মণ্ডল স্যার আজ আমাদের মাঝে এসেছেন, এটা ইতিবাচক দৃষ্টান্ত।”

পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে অ্যাডভোকেট অসীম কুমার মণ্ডল বলেন, “বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। শ্যামনগরের প্রতিটি মানুষ আমার কাছে সমান। আমি রাজনীতি করি মানুষের সেবা করার জন্য। আজকে পূজা মণ্ডপে এসে আমি দেখলাম, আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষরা কতটা আনন্দ নিয়ে উৎসব পালন করছেন। কিন্তু এর মধ্যেও তাদের জীবনে নানা কষ্ট আছে—জলবায়ু দুর্যোগ, দারিদ্র্য আর কর্মসংস্থানের সংকট।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের জাতীয় নেতা তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা কর্মসূচি শুধু রাজনৈতিক শ্লোগান নয়, এটি বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের জীবনের সমস্যার সমাধানের রূপরেখা। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ধানের শীষের বিজয়ের মাধ্যমেই এ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে। আমি যদি আপনাদের আশীর্বাদে নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ পাই, তাহলে সেই ৩১ দফার আলোকে উপকূলীয় মানুষের দুর্দশা দূর করা, কৃষকের সমস্যার সমাধান, শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং নারীদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করাই হবে আমার প্রথম কাজ।”

তিনি আবেগঘন কণ্ঠে যোগ করেন, “ধর্ম যার যার, উৎসব সবার—এই বিশ্বাস নিয়েই আমি কাজ করি। আর বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ হচ্ছে মানুষের অধিকার ও পরিবর্তনের প্রতীক। তাই আমি চাই, আগামী নির্বাচনে আপনারা সবাই ধানের শীষে ভোট দিয়ে তারেক রহমানের ৩১ দফা কর্মসূচিকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার সুযোগ করে দিন।”

অসীম কুমার মণ্ডল আরও বলেন, “আমাদের দেশের শক্তি হলো সম্প্রীতি। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান—সবাই মিলেই বাংলাদেশ। পূজা মণ্ডপে এসে আমি সেই শক্তি আরও অনুভব করেছি। আমি চাই, আগামীতে কোনো সম্প্রদায় যেন বঞ্চিত না হয়, সবাই সমানভাবে রাষ্ট্রের সুবিধা পায়।”

শ্যামনগরের মানুষ আশা প্রকাশ করেছেন, রাজনীতিবিদরা শুধু নির্বাচনের সময় নয়, সবসময় তাদের পাশে থাকবেন। পূজা-পার্বণের আনন্দ যেমন মিলন ঘটায়, তেমনি এই মিলন মঞ্চে জননেতার উপস্থিতি তাদের মনে আশার আলো জ্বালায়।

অঞ্জলি রানী, স্কুল শিক্ষিকা বলেন, “আমাদের সন্তানরা যেন নিরাপদে পড়াশোনা করতে পারে, কাজের সুযোগ পায়—এটাই আমাদের চাওয়া। যদি অসীম বাবু তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এসব নিশ্চিত করেন, আমরা তাকে সবসময় সমর্থন করব।”

শ্যামনগরের পূজা মণ্ডপে অসীম কুমার মণ্ডলের উপস্থিতি শুধু রাজনৈতিক শিষ্টাচার নয়, মানবিক এক উদ্যোগ হিসেবেও স্থানীয়রা দেখেছেন। উৎসবের আনন্দের ভিড়ে মানুষের কষ্ট-দুর্দশা শুনে তিনি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা বাস্তবায়িত হলে এই অঞ্চলের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।

স্থানীয়রা মনে করেন, এমন নেতারাই প্রকৃত জননেতা, যারা খেটে খাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়ান এবং জাতীয় নেতৃত্বের ঘোষিত দিকনির্দেশনা বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকেন।