সাতক্ষীরায় জামায়াতে ইসলামের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, দেশে গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে এবং প্রতিটি ভোটের সঠিক মূল্যায়ন করতে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির নির্বাচন ছাড়া বিকল্প নেই।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর '২৫) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্ক থেকে মিছিলটি বের হয়। এর আগে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে এক প্রতিবাদ সমাবেশ করে দলটি। প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে জেলা ও উপজেলা জামায়াতে ইসলামের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারী ও সাতক্ষীরা সদর ২ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, জেলা আমির উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারী সহযোগী অধ্যাপক ওমর ফারুক, শহর আমির জাহিদুল ইসলাম, সদর আমির মাওলানা মোশারফ হোসেন, শহর সেক্রেটারী খোরশেদ আলম, সদর সেক্রেটারী হাবিবুর রহমানসহ স্থানীর নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার একটি দলকে এখনই বিশেষ সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা সরকারকে বলতে চাই, আপনি দেখুন, যে ঢাকা থেকে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র সমাজ কী সিদ্ধান্ত দিয়েছে। আগামীতে বাংলাদেশ কারা পরিচালনা করবে। তিনি বলেন, পিয়ার পদ্ধতি ছাড়া বাংলাদেশের নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। পিয়ার পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে কোন টেন্ডারবাজ চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী মাস্তানি করার সুযোগ থাকবে না।
যদি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকে, যদি স্বচ্ছ নির্বাচন হয়, তাহলে আগামীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সরকার গঠন করবে বলে মনে করেন এদেশের সাধারণ জনগণ।
বক্তারা পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে বলেন, জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। ফ্যাসিস্ট সরকারের সকল জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করতে হবে। স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
এর আগে বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থান থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে এসে জড়ো হয়। পরে সেখান থেকে জাতীয় পতাকা এবং জামায়েতে ইসলামের দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয় পরে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে এসে প্রতিবাদ সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
এদিকে, তালায় পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পিআর পদ্ধতিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে তালায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে উপজেলা জামায়াতে ইসলামী। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর '২৫) বিকালে তালা ব্রজেন দে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পুরাতন ফুটবল মাঠ থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে উপজেলা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়।
এর আগে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের প্রার্থী অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ।
তিনি বলেন, জুলাই সনদে আইনি ভিত্তি প্রদান, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন এবং সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ তৈরির দাবিতেই এ কর্মসূচি। তরুণ প্রজন্মের প্রথম ভোট দাঁড়িপাল্লার পক্ষে হোক। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে শুধু মুসলিম নয়, সকল ধর্মের মানুষ ও নারীরাও সর্বোচ্চ মর্যাদা পাবেন।
উপজেলা জামায়াতে আমির মাওলানা মফিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও উপজেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক ইদ্রিস আলীর সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা নায়েবে আমির ডা. মাহমুদুল হক এবং শ্রমিককল্যাণ ফেডারেশন জেলা সভাপতি অধ্যাপক সুজায়েত আলী।
এছাড়া বক্তব্য দেন জেলা কর্ম পরিষদ সদস্য ও তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান প্রার্থী ডা. আফতাব হোসেন, ইসলামকাটি ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক গোলাম ফারুক, মাও. রেজাউল করিম,তালা ইউনিয়ন আমির মো. মুজিবুর রহমান, খলিলনগর ইউনিয়ন আমির মাও. আকবর হোসেন, তেতুলিয়া ইউনিয়ন আমির মাও. আ. হালিম, উপজেলা শ্রমিককল্যাণ ফেডারেশন সভাপতি আমিনুর রহমান, উপজেলা যুব জামায়াত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান রেন্টু,উপজেলা সহকারী সেক্রেটারি মাও. কবিরুল ইসলাম, উপজেলা অফিস সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর হোসাইন, হাফেজ শাহ আলম, ইসলামকাটি ইউনিয়ন শ্রমিককল্যাণ ফেডারেশন সভাপতি আব্দুল হাকিম, খলিলনগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যাপক খলিলুর রহমান, তালা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান প্রার্থী এডভোকেট মশিউর রহমান, উপজেলা তথ্য ও মিডিয়া সভাপতি অধ্যাপক ইয়াসিন আলী, উপজেলা তথ্য ও মিডিয়া সেক্রেটারি মাস্টার নাজমুল ইসলাম। সমাবেশে উপজেলা জামায়াতের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
একই দাবিতে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেবহাটা উপজেলা শাখার উদ্যোগে এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর '২৫) বিকাল সাড়ে ৪টায় উপজেলা জামায়াত অফিস চত্বর থেকে মিছিলটি উপজেলার প্রধান সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ করে জামায়াত অফিস চত্বরে এসে সমাপ্ত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা অলিউল ইসলাম।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী আলহাজ্ব মাহবুবুল আলম, কর্মপরিষদ সদস্য মোস্তফা আসাদুজ্জামান মুকুল, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি এইচ এম ইমদাদুল হক সহ উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।
এছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়ন পর্যায় থেকে দলের নেতারা এতে অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা বলেন, দেশ বর্তমানে গভীর রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে এগোচ্ছে। ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী যে রাজনৈতিক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরে বলেন, ফ্যাস্টিট আওয়ামী স্বৈরাচার পতনের পরে দেশের প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছিলো এবং সংবিধানগত শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল। এ প্রেক্ষাপটে জনগণের অভিপ্রায়কে সামনে রেখে গঠিত অন্তর্র্বতী সরকারের অধীনে নানা সংস্কার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে এবং বিভিন্ন কমিশন গঠিত হয়েছে। একই সঙ্গে তারা বর্তমান সরকারের কাছে দাবি জানান। সমাবেশে বক্তারা পাঁচ দফা দাবির কথা উত্থাপন করেন। যা হল- জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, সকল গণহত্যা ও দূর্নীতির দৃশ্যমান বিচার, স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি। এ দাবি বাস্তবায়ন না হলে বৃহৎ গণআন্দোলনের পথে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
অপরদিকে, শ্যামনগর জামায়েতের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শ্যামনগর উপজেলা শাখার উদ্যোগে শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর '২৫) বিকাল সাড়ে ৪টায় শ্যামনগর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিছিলটি উপজেলার প্রধান সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ করে মাইক্রো স্ট্যান্ডে এসে সমাপ্ত হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন শ্যামনগর উপজেলা আমীর মাওলানা আবদুর রহমান।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাবেক সংসদ সদস্য গাজী নজরুল ইসলাম, জেলা জামায়াত নেতা অধ্যাপক আব্দুল জলিল, মাওলানা আব্দুল মজিদ, উপজেলা নায়েবে আমীর মাওলানা মঈনুদ্দিন মাহমুদ, অধ্যাপক ফজলুল হক, উপজেলা সেক্রেটারী মাওলানা গোলাম মোস্তফা এবং সহকারী সেক্রেটারী মাস্টার রেজাউল ইসলাম, অধ্যক্ষ সাইদি হাসান বুলবুল, মাওলানা আমিনুর রহমান, অধ্যাপক গাজী আব্দুল হামিদ, অধ্যাপক মহসিন আলমসহ উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়ন পর্যায় থেকে দলের নেতারা এতে অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা বলেন, দেশ বর্তমানে গভীর রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে এগোচ্ছে। ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী যে রাজনৈতিক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরে বলেন, ফ্যাস্টিট আওয়ামী স্বৈরাচার পতনের পরে দেশের প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছিলো এবং সংবিধানগত শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল। এ প্রেক্ষাপটে জনগণের অভিপ্রায়কে সামনে রেখে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নানা সংস্কার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে এবং বিভিন্ন কমিশন গঠিত হয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, গণতান্ত্রিক মূলনীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত কমিশনগুলোর সুপারিশের মধ্যে থেকে ৮৪টি প্রস্তাব সিদ্ধান্ত হিসেবে গৃহীত হয়েছে । যদিও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রাজনৈতিক দলসমূহের মতভেদ থাকায় একাধিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ অসম্ভব হয়েছে বলে তারা মনে করেন।
সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা জাতীয় ঐক্য এবং গণআন্দোলনের মাধ্যমে জনস্বার্থ নিশ্চিত করা ছাড়া বিকল্প নেই বলে জোর তাগিদ প্রদান করেন। একই সঙ্গে তারা বর্তমান সরকারের কাছে দাবি জানান—জাতীয় স্তরে গ্রহণযোগ্য ও আইনগত ভিত্তিসহ ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ কার্যকর করার ব্যবস্থা নিতে হবে এবং ওই সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এমন নিশ্চয়তা দিতে হবে।
সমাবেশে বক্তারা পাঁচ দফা দাবির কথা উত্থাপন করেন। (১) জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠা ও প্রয়োজনীয় সংশোধনী গ্রহন, (২) জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্পন্ন করা, (৩) ভোটকেন্দ্র দখল ও কালো টাকার ব্যবহার, ভোটে অপতৎপরতা ও পেশিশক্তি প্রদর্শন বন্ধ করা, (৪) পদ্ধতিগতভাবে পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিতে কোয়ালিটি-সম্পন্ন পার্লামেন্ট ও দক্ষ আইনপ্রণেতা তৈরির লক্ষ্য স্থির করা এবং (৫) গণহত্যা মামলার বিচার, দুর্নীতি দমন ও রাষ্ট্রসংস্কারের মাধ্যমে স্বৈরাচারী শাসনের পুনরাবর্তন রোধ করা। বক্তারা এ দাবি বাস্তবায়ন না হলে বৃহৎ গণআন্দোলনের পথে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
সমাবেশে অন্যান্য বক্তারা জনসাধারণের প্রতি আহবান জানান যাতে সাধারণ মানুষ গণতন্ত্র ও ধর্মীয় মূল্যবোধ রক্ষায় রাজনৈতিক সচেতনতা বহন করে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে উপস্থিত নেতারা কর্মসূচির সফলতার জন্য অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানান এবং ভবিষ্যতে নির্ধারিত কর্মসূচি বাস্তবায়নে সকল স্তরের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
মতামত