অনিক রায়,প্রতিনিধি,ফরিদপুর।
১৯ সেপ্টেম্বর,২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।
- একজন সত্যিকারের নায়ক কখনো সময়ের বন্দী হয় না, সে সময়কে ছুঁয়ে যায় নিজের প্রতিভায়।এমনই এক অসাধারণ নায়ক সালমান শাহ।
ঢালিউডের ‘স্বপ্নের নায়ক’সালমান শাহর আজ ৫৪তম জন্মদিন। ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের জকিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এই জনপ্রিয় অভিনেতা। সালমান শাহর প্রকৃত নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। অভিনয় ও স্টাইলে এখনও মুগ্ধ বর্তমান প্রজন্মের দর্শকেরা দর্শকেরা। ক্যারিয়ারের সময়সীমা মাত্র চার বছর, আর তাতেই হয়েছিলেন খ্যাতিমান।
মাত্র চার বছর সময়ের মধ্যে (১৯৯৩-১৯৯৬) ২৭টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে এক অনন্য ইতিহাস গড়েছিলেন। বাংলা সিনেমায় এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছিল তার হাত ধরেই।সোহানুর রহমান সোহানের ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ (১৯৯২) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্রজগতে পদার্পণ সালমান শাহের। প্রথম ছবিতেই জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি।এছাড়াও তুমি আমার’ (শাবনূর), ‘অন্তরে অন্তরে’ (মৌসুমী), ‘কন্যাদান’ (লিমা), ‘জীবন সংসার’ (শাবনূর), ‘সুজন সখী’ (শাবনূর),‘এই ঘর এই সংসার’ (বৃষ্টি), ‘স্নেহ’ (মৌসুমী), ‘বিচার হবে’ (শাবনূর), ‘আনন্দ অশ্রু’ (শাবনূর), ‘সত্যের মৃত্যু নেই’ (শাহনাজ), ‘প্রিয়জন’ (শিল্পী), ‘শুধু তুমি’ (শ্যামা), ‘স্বপ্নের নায়ক’ (শাবনূর), ‘দেন মোহর’ (শাবনূর) ও ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ অন্যতম শিল্পকর্ম।
- গুণী অভিনেত্রী আনোয়ারা বেগম সহশিল্পী হিসেবে পেয়েছিলেন সালমান শাহকে। এই নায়ককে এখনো মনে পড়ে জানিয়ে তিনি বলেন,"সালমানকে এখনো মনে পড়ে। ও মজা করে আমাকে বলত, ও দাদি ও দাদি আমি তোমার দিওয়ানা। সালমান অনেক বড় মাপের শিল্পী ছিল। ওর ড্রেস সেন্স ভালো ছিল। শুটিংয়ের বাইরে অনেক দুষ্ট ছিল। অনেক পাগলামি করত। তবে কাজে কখনো পাগলামি করত না। চরিত্রে ডুবে যেত। যে কারণে অল্প বয়সে এত নাম করেছে। অল্প সিনেমা করে সালমানের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক হয়েছিল। সালমান শাহকে কল্পনা করে কাঁদতাম। আমাদের ভাগ্য খারাপ যে অল্প দিনে ওকে আমাদের হারাতে হয়েছে। বেঁচে থাকলে আরও সিনেমা করত। ওরে আল্লহ খুব দ্রুত নিয়ে গেছে।"
এতকিছুর পরও তার নামে নেই কোনো শুটিং ফ্লোর অথবা রাস্তা। তার নামে এফডিসিতে নেই কোনো স্থাপনা। প্রয়াণের এত বছর পেরিয়েও সালমান শাহ তার ভক্তদের কাছে এখনো স্বতন্ত্র আলোয়ে মহীয়ান। মাত্র সাড়ে তিন বছরের ক্যারিয়ারেই সালমান থেকে এতটা প্রাপ্তি সত্যি বিস্ময়ের ব্যাপার। তার হাত ধরেই বাণিজ্যিক সিনেমা পেয়েছিল ভিন্নমাত্রা।সালমান অভিনীত ২৭টি সিনেমার মধ্যে ২১টি তার জীবদ্দশায় মুক্তি পেয়েছিল আর বাকি ৬টি সিনেমা মুক্তি পায় মৃত্যুর পর।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মাত্র ২৫ বছর বয়সে গুণী এই অভিনেতার রহস্যজনক মৃত্যু পুরো জাতিকেই স্তব্ধ করে দিয়েছিল। ক্ষণিকের জন্যে ইন্ডাস্ট্রিতে আসলেও তিনি রাতারাতি হয়ে ওঠেন বাংলা সিনেভক্তদের পর্দার সবচেয়ে জনপ্রিয় স্টাইল আইকন। যা আজও ম্লান হয়নি।
তবে,নায়কতা কখনো মঞ্চের মেয়াদে বাঁধা থাকে না, সে সময়ের সাথে থেকে চিরন্তন হয়ে ওঠে।সেই চিরন্তন নায়ক, সালমান শাহ, যিনি বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এক অতুলনীয় ছাপ রেখে গেছেন।বেঁচে থাকলে আজ ৫৫ বছরে পা রাখতেন সালমান শাহ সালমান শাহ।
মতামত