সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা বাজারে স্থানীয় সার, বীজ ও কিটনাশক ব্যবসায়ীদের নিয়ে এক সমন্বয় সভা ও বাজার প্রচার কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫) আয়োজিত এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে ইএলএসআরপি প্রকল্প, কারিতাস বাংলাদেশ, সিলেট অঞ্চল।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সাচনা বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদ আল আজাদ এবং সঞ্চালনা করেন কল্যাণব্রত তালুকদার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন—উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রিয়াজ হাসান, জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন তালুকদার, বাজার কমিটির সহকারী সম্পাদক হাজী সেলিম আহমেদ, সার ও বীজ ডিলার মনসুর আলী, নারী উদ্যোক্তা রুজিনা বেগম, দেশীয় বীজ ভাণ্ডারের উদ্যোক্তা মেহেদী হাসান সুমন, ভার্মি কম্পোস্ট উদ্যোক্তা এমদাদুল ইসলামসহ কারিতাসের উপকারভোগী সদস্যরা।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে কারিতাসের জুনিয়র কর্মসূচি কর্মকর্তা স্বপন নায়েক বলেন, কারিতাস সবসময় কৃষি, পরিবেশ ও মানবসম্পদ উন্নয়নে কাজ করছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও কৃষকদের একত্রিত করে বাজারকে সমৃদ্ধ করা আমাদের মূল লক্ষ্য।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রিয়াজ হাসান বলেন, ভেজালমুক্ত সার ও উন্নতমানের বীজ নিশ্চিত করতে ব্যবসায়ীদের আন্তরিক ভূমিকা রাখতে হবে। কৃষি বিভাগ সবসময় কৃষকদের পাশে রয়েছে।
প্যানেল চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন তালুকদার বলেন, কৃষি উন্নয়ন মানেই গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন। উদ্যোক্তাদের টেকসই কৃষিতে এগিয়ে আসতে হবে।
বাজার কমিটির সহকারী সম্পাদক হাজী সেলিম আহমেদ বলেন, আমরা ভেজাল সার-বীজ বিক্রির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকব এবং কৃষকদের সঠিক সেবা নিশ্চিত করব।
সভাপতি আসাদ আল আজাদ বলেন, সাচনা বাজারকে কৃষিবান্ধব বাজার হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ আমাদের। ব্যবসায়ী ও কৃষকের মধ্যে আস্থা গড়ে তুলতে কারিতাসের এ আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
কারিতাসে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত উদ্যোক্তারা নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। ভার্মি কম্পোস্ট উদ্যোক্তা এমদাদুল ইসলাম বলেন, পরিবেশবান্ধব জৈব সার জনপ্রিয় হচ্ছে এবং এটি রাসায়নিক সার নির্ভরতা কমাতে সহায়ক। নারী উদ্যোক্তা রুজিনা বেগম বলেন, স্বামীর অনুপস্থিতিতেও তিনি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং কারিতাসের সহায়তা তার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। দেশীয় বীজ ভাণ্ডারের উদ্যোক্তা মেহেদী হাসান সুমন বলেন, দেশীয় বীজ ব্যবহারে উৎপাদন খরচ কমে এবং পরিবেশও সুরক্ষিত থাকে।
আলোচনায় বক্তারা দারিদ্র্য নিরসন, কৃষি উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, মানবাধিকার রক্ষা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় কারিতাসের কার্যক্রম তুলে ধরেন। বিশেষভাবে জৈব কৃষি সম্প্রসারণ, নারী উদ্যোক্তা তৈরি, শিশু শ্রম রোধ এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির গুরুত্ব আলোচিত হয়।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় ব্যবসায়ী, কৃষক ও উদ্যোক্তারা বাজার সম্প্রসারণে সমন্বিতভাবে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
মতামত