চট্টগ্রাম

কক্সবাজারে দলিল নিবন্ধনে বর্ধিত অতিরিক্ত উৎসে কর বাতিল: সম্পূর্ণ প্রতিবেদন

প্রিন্ট
কক্সবাজারে দলিল নিবন্ধনে বর্ধিত অতিরিক্ত উৎসে কর বাতিল: সম্পূর্ণ প্রতিবেদন

ছবি : সংগ্রহীত


প্রকাশিত : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কক্সবাজার জেলায় জমি ক্রয়-বিক্রয়ের সময় দলিল নিবন্ধনের ওপর আরোপিত বর্ধিত অতিরিক্ত উৎসে কর অবশেষে বাতিল করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) এনবিআরের সদস্য এ.কে.এম বদিউল আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

২৪ জুন ২০২৫ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এক প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) এলাকায় এবং জেলা সদরে অবস্থিত সকল পৌরসভার অন্তর্গত কক্সবাজার জেলায় ১৮৮টি মৌজার মধ্যে ৮১টি মৌজার দলিল নিবন্ধনে অতিরিক্ত উৎসে কর আরোপ করা হবে।

করহার ঘোষণা করা হয়: নাল জমি: শতকপ্রতি ২৫,০০০ টাকা, আবাসিক জমি (বাড়ী শ্রেণী): শতকপ্রতি ৫০,০০০ টাকা, সর্বোচ্চ ১,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত। ১ জুলাই ২০২৫ থেকে কর কার্যকর হয়। এই করহার স্থানীয় মানুষের জন্য অত্যধিক এবং অবাস্তব হওয়ায় জমি ক্রয়-বিক্রয় প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে যায়। সাধারণ মানুষ আর্থিক চাপের মধ্যে পড়ে এবং দলিল নিবন্ধনের সংখ্যা কমে যায়।

উৎসে কর বিধিমালা-২০২৩ (সংশোধিত, ২৪ জুন ২০২৫) অনুসারে, “অন্য কোনো উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ” শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করা হয়।  কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (কউক) এই সংজ্ঞার আওতায় আনা হয়। ফলে কক্সবাজারের ৮১টি মৌজা, যার মধ্যে দীপাঞ্চল, সেন্টমার্টিন, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া অন্তর্ভুক্ত, এই অতিরিক্ত করের আওতায় পড়ে। জেলা রেজিস্ট্রার ও মহাপরিদর্শক  এনবিআরের কাছে এই করহার পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।

জেলা দলিল লেখক সমিতি এবং সাধারণ মানুষ মানববন্ধন, সংবাদ প্রচার ও বিভিন্ন দফতরে আবেদন করে কর বাতিলের দাবি জানায়।

সাধারণ মানুষ বলেন, অতিরিক্ত করের কারণে জমি ক্রয়-বিক্রয় কঠিন হয়ে পড়েছে, দলিল নিবন্ধনের কার্যক্রম স্থবির হয়েছে এবং অর্থনৈতিক চাপ বেড়ে গেছে। রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলোও এই বিষয়ে সরকারের কাছে পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।

বাতিলের প্রজ্ঞাপন: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে এনবিআরের সদস্য এ.কে.এম বদিউল আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় থাকা ৮১টি মৌজার উপর আরোপিত অতিরিক্ত উৎসে কর বাতিল করা হলো। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই মৌজাগুলোর দলিল নিবন্ধনে পুরনো বা প্রচলিত উৎসে কর হারই প্রযোজ্য হবে।

এতে জেলা ও উপজেলার সাধারণ মানুষের স্বস্তি ফিরে এসেছে।

সম্ভাব্য প্রভাব: অর্থনৈতিক সচলতা, জমি ক্রয়-বিক্রয় পুনরায় শুরু হবে। দলিল নিবন্ধনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। স্থানীয় বাজারে আর্থিক লেনদেন সচল হবে।

সামাজিক স্বস্তি: সাধারণ মানুষ আর্থিকভাবে সহজে জমি ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে। ব্যবসায়ী ও পেশাজীবীরা স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরতে পারবে।

আইন বা প্রজ্ঞাপন তৈরি করার সময় স্থানীয় বাস্তবতা ও জনমত বিবেচনা করা জরুরি। “উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ” এবং “অন্য কোনো উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ” শব্দের স্পষ্ট ব্যাখ্যা প্রয়োজন।

সূত্র ও তথ্য: জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রজ্ঞাপন ও সংশোধিত গেজেট: nbr.gov.bd, স্থানীয় সংবাদ ও রিপোর্ট: খবরসংযোগ

বর্ধিত উৎসে কর বাতিলের ফলে কক্সবাজারের সাধারণ মানুষ এবং ব্যবসায়ীরা স্বস্তিতে ফিরেছে। দীর্ঘদিন ধরে জমি লেনদেনে স্থবিরতা এবং আর্থিক চাপের পর এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

জেলা দলিল লেখক সমিতি, রাজনৈতিক নেতা, সাধারণ মানুষ এবং সংবাদমাধ্যমের যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে সরকারের কাছে তাদের দাবি পৌঁছেছে। স্থানীয় অর্থনীতি ও সামাজিক কার্যক্রম পুনরায় সচল হচ্ছে।