ছবি : দৈনিক বাংলার প্রতিচ্ছবি
স্টাফ রিপোর্টার:মোঃ বোরহান উদ্দিন
আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় চলছে প্রতিমা তৈরির ব্যস্ততা। এ বছর উপজেলার ৯১টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় শিল্পীরা।
প্রতিটি প্রতিমা সর্বনিম্ন ২০ হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তবে আকার, নকশা ও সাজসজ্জার উপর ভিত্তি করে দাম নির্ধারিত হয়।
পৌর শহরের সকাল বাজার ও দক্ষিণসাহপাড়া এলাকা ঘুরে দেখা যায়, খড়, কাঠ ও সুতা দিয়ে প্রতিমার কাঠামো তৈরি করছেন কারিগররা। কেউ মাটি দিয়ে দেবীর আকৃতি গড়ে তুলছেন, আবার কেউ নিপুণ হাতে আঁকছেন দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী ও কার্তিকের রূপ। মাটির কাজ শেষ পর্যায়ে, আর দুএক দিনের মধ্যে শুরু হবে রঙের কাজ। পুরুষদের পাশাপাশি নারী ও শিশুরাও সহযোগিতা করছেন প্রতিমা তৈরির কাজে।
স্থানীয় প্রতিমা শিল্পীরা জানিয়েছেন, শুধু শেরপুর নয়, আশপাশের চাঁন্দাইকোনা, বগুড়া সদর, সিরাজগঞ্জ ও গোবিন্দগঞ্জ থেকেও ক্রেতারা এসে প্রতিমা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
প্রতিমা শিল্পী শ্রীকান্ত সরকার বলেন, “আমার বাড়ি ও স্থানীয় একটি মন্দিরে মোট ১৫টি প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। এখানে আট জন শ্রমিক কাজ করছে। প্রতিটি প্রতিমা ২৫ হাজার থেকে প্রায় এক লাখ টাকায় বিক্রি হবে। গতবারের তুলনায় এ বছর চাহিদা বেশি।”
প্রতিমা শিল্পী শ্রাবণ শীল জানান, “এখানে ৮টি প্রতিমা তৈরি হচ্ছে। দাম ২০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা। আমিসহ দুজন কাজ করছি, মা-ও সহযোগিতা করেন। মাটি, রং, সুতা সব কিছুর দাম বেড়েছে, তবুও চাহিদা কমেনি।”
অন্য এক শিল্পী প্রকাশ ঘোষ অবুঝ বলেন, “দুটি কারখানা ও বাড়িতে মোট ১০টি প্রতিমা তৈরি করছি আমরা পাঁচজন মিলে। দাম পড়বে ২৫ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা। মাটির কাজ শেষ, মঙ্গলবার থেকে রঙের কাজ শুরু হবে।”
আগামী ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবীর আগমনী বার্তা ছড়িয়ে পড়বে। ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠী থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পূজা শুরু হয়ে ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব।
শেরপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সংগ্রাম কুন্ডু বলেন, “গতবারের তুলনায় এবার ৮টি বেশি পূজা হচ্ছে, যা আমাদের জন্য আনন্দের। প্রতিটি প্রতিমা তৈরির স্থান আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করছি। আশা করি, সবার সহযোগিতায় সুন্দরভাবে দুর্গোৎসব উদযাপন সম্ভব হবে।”
এদিকে পূজা ঘিরে নিরাপত্তা জোরদারের প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ। শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জয়নুল আবেদীন জানান, “মণ্ডপ ও প্রতিমা তৈরির স্থানে আমরা টহল জোরদার করেছি। পাশাপাশি ফুটপেট্রোলও অব্যাহত আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসন ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘন পরিবেশে পূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে আমরা আশাবাদী।
মতামত