অর্থনীতি

বিশ্বব্যাংকের লাল তালিকায় বাংলাদেশ

প্রিন্ট
বিশ্বব্যাংকের লাল তালিকায় বাংলাদেশ

ছবি : বিশ্ব ব্যাংক (ছবি: সংগৃহীত)


প্রকাশিত : ১৪ আগস্ট ২০২৫

ঢাকা | ১৩ আগস্ট ২০২৫


খাদ্য মূল্যস্ফীতির লাল তালিকায় এখনও বাংলাদেশ

বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টানা চার বছরের বেশি সময় ধরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশের ওপরে থাকায় বাংলাদেশ এখনও রয়েছে লাল তালিকায়। ২০২১ সালের জুন থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত একটানা এই উচ্চহার বজায় থাকায় দেশটি তালিকা থেকে বের হতে পারেনি।

বিশ্বব্যাংকের মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশের খাদ্যপণ্যের দাম মাসিক ৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেলে সেটিকে লাল তালিকাভুক্ত করা হয়। বাংলাদেশে সর্বশেষ ২০২১ সালের মে মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৪.৮৭ শতাংশে নেমেছিল—যা ছিল গত কয়েক বছরের সর্বনিম্ন হার। এর পর থেকে প্রতি মাসেই এই হার ৫ শতাংশের বেশি রয়ে গেছে।

দামের ঊর্ধ্বগতি

বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আলোচ্য সময়ে খাদ্যপণ্যের দাম সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১৪.১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে চাল, ডাল, সবজি, ডিম ও মুরগির দাম নতুন করে বাড়তে থাকায় মূল্যস্ফীতির চাপ এখনও বিদ্যমান।

বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব

বিশ্বব্যাংকের মতে, দীর্ঘমেয়াদি খাদ্য মূল্যস্ফীতি একটি দেশের মুদ্রার স্থিতিশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করে। বিনিয়োগকারীরা সাধারণত মূল্যস্ফীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার স্থিতিশীলতাকে বিবেচনায় নিয়ে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন।

অতীতের প্রেক্ষাপট

২০০৮-০৯ অর্থবছরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল মাত্র ০.২৫ শতাংশ, যা দেশটিকে সবুজ তালিকায় রেখেছিল। ২০১১-১২ অর্থবছরে এ হার ছিল ২.৫৭ শতাংশ এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৪.২৩ শতাংশ—তখন বাংলাদেশ ছিল হলুদ তালিকায়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হারটি ৫ শতাংশের ওপরে থাকায় লাল তালিকায় থাকার ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে।

যুদ্ধোত্তর প্রভাব

২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বৈশ্বিক খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করে। এর ফলে ২০২২ সালের মে মাসে বাংলাদেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়ায় ৮.৩০ শতাংশে। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে এ হার বেড়ে পৌঁছে যায় ১৪.১০ শতাংশে—যা ২০০৭-০৮ সালের রেকর্ডের সমান।

বর্তমান অবস্থা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার টাকা ছাপানো বন্ধ, ডলারের দাম স্থিতিশীল রাখা এবং বাজার নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নেওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৭.৫৬ শতাংশে নেমেছে। তবে এটি এখনও লাল তালিকার বাইরে আসেনি।