কাঁচাবাজার

রাজধানীর কাঁচাবাজারে আগুন- সবজি, ডিম ও পেঁয়াজের দামে চরম ঊর্ধ্বগতি

প্রিন্ট
রাজধানীর কাঁচাবাজারে আগুন- সবজি, ডিম ও পেঁয়াজের দামে চরম ঊর্ধ্বগতি

ছবি : সবজি, ডিম ও পেঁয়াজ


প্রকাশিত : ০৮ আগস্ট ২০২৫

ঢাকা | ৮ আগস্ট

টানা বৃষ্টির কারণে সরবরাহ কমে রাজধানীর কাঁচাবাজারে সবজির দাম চড়া আকার ধারণ করেছে। এর সঙ্গে বেড়েছে ডিম ও পেঁয়াজের দামও। দুই সপ্তাহ আগের তুলনায় পেঁয়াজের কেজি ২০ থেকে ৩০ টাকা, আর ডিমের ডজনপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে বেগুনের। সরবরাহ কম দেখিয়ে গত সপ্তাহের ১০০ টাকার গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়, আর ৭০ টাকার লম্বা বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। দেশি শসা ১০০ থেকে বেড়ে ১২০, হাইব্রিড শসা ৬০ থেকে ৮০, ঝিঙ্গা ৬০ থেকে ৮০, লাউ ৫০ থেকে ৭০-৮০, করলা ৮০ থেকে ১০০, পটোল ৬০, বরবটি ৮০, চিচিঙ্গা ৬০, কাঁকরোল ৮০, ঢ্যাঁড়স ৬০, চায়না গাজর ১২০-১৪০, দেশি গাজর ৮০, পেঁপে ৩০, টমেটো ১৬০, কুমড়ো ৪০, কচুরমুখী ৬০, লেবুর হালি ৩০, কচুর লতি ৮০ ও আলু ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচের দাম কিছুটা কমে ১৮০-২০০ টাকায় নেমে এসেছে, যা দুই সপ্তাহ আগে ছিল ২০০-২৫০ টাকা।

কাপ্তান বাজারের এক বিক্রেতা “বৃষ্টির কারণে অনেকের ফসল নষ্ট হয়েছে, সরবরাহ কমেছে, তাই দাম বেড়েছে। এখন বেশিরভাগ সবজি ৮০ টাকার ওপরে।”

ডিমের বাজারেও একই চিত্র। দুই সপ্তাহে লাল ও সাদা ডিমের ডজনপ্রতি দাম ২০ টাকা বেড়েছে, হাঁসের ডিমের ডজনপ্রতি বেড়েছে ৩০ টাকা। বর্তমানে এক ডজন লাল ডিম ১৪০, সাদা ডিম ১৩০ ও হাঁসের ডিম ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাঁসের একটি ডিমের দাম ২০ টাকা। এক ডিম বিক্রেতা বলেন, “বৃষ্টিতে অনেকের মুরগি মারা গেছে, সরবরাহ কমেছে, চাহিদা বেড়েছে। পাইকাররা দাম বাড়িয়েছে, তাই আমরাও বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।”

পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও সরবরাহ সংকট চোখে পড়েছে। দুই সপ্তাহ আগে ৫০-৫৫ টাকার পেঁয়াজ প্রথমে ৬০-৬৫ টাকায় ওঠে, বর্তমানে কেজি ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতা মো. মোস্তফা জানান, “বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কম, বাইরে থেকেও আসছে না। এখন অনেকে বেশি কিনে মজুত করছেন, ফলে বাজারে আরও ঘাটতি তৈরি হচ্ছে।”

বাজারে আসা এক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “পেঁপে ছাড়া ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। সবজি কিনতেই সব টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে, মাছ-মাংস কিনবো কী দিয়ে? তদারকির কেউ নেই।”

মাছ-মুরগির দামও বেড়েছে। লেয়ার মুরগি কেজি ২৮০-২৯০, পাকিস্তানি (সোনালি) মুরগি ৩২০-৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা ১০-২০ টাকা বেশি। দেশি মুরগি কেজি ৫৫০-৬০০ টাকায় অপরিবর্তিত রয়েছে। ব্রয়লার মুরগি এখনও কেজি ১৭০-১৮০ টাকা।

রুই মাছের ক্ষেত্রে ২০-৩০ টাকা দাম বেড়েছে। ২-২.৫ কেজি ওজনের রুই ৪৮০, ১.৫-২ কেজির ৩৯০-৪০০, ১-১.৫ কেজির ৩২০-৩৪০ এবং এক কেজির কম ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পোয়া মাছ ৬০০, মৃগেল ৩০০, তেলাপিয়া ২৫০, পাঙ্গাশ ১৮০, বড় পাঙ্গাশ ২৫০, শিং ৫৫০-৬০০, চিংড়ি ৯০০-১৪০০, এক কেজির নিচে ইলিশ ২০০০-২২০০ এবং বড় ইলিশ ২৫০০-২৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে সবজির সরবরাহ ঘাটতি, আবহাওয়ার প্রভাব ও পাইকারি পর্যায়ে দাম বৃদ্ধির কারণে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতা ও ক্রেতা উভয়ই।