শতশত স্টুডেন্ট ও অভিভাবকের বুকফাটা আর্তনাদ!
শিরোনাম দেখে আপনারা হয়তো অবাক হচ্ছেন, এই পাগলে কি বলছে? স্টুডেন্ট ও অভিভাবকদের আর্তনাদ হবে কেন? সত্যি এর পিছনের রহস্য জানতে পারলে আপনি আমার কথা বিশ্বাস করবেন। এবং একমত হবেন। হয়তো মিলে যেতে পারে আপনার সাথে, আপনার সন্তানের সাথে অথবা আপনার পরিচিত কারো সাথে।
আপনি হয়তো ভাবছেন সকল পরীক্ষার্থী এ প্লাস পাওয়া এই স্কুলে সন্তানকে ভর্তি করিয়ে দিতে পারলেই আপনার সন্তানের এ প্লাস নিশ্চিত? তাহলে আপনি বোকার স্বর্গে বাস করছেন। পরীক্ষার আগে আপনি খোঁজ নিন, এই ধরনের ভালো ফলাফল করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কতজন স্টুডেন্ট টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো? যদি ২০০০ স্টুডেন্ট টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকে, তাহলে সেখান থেকে বেছে বেছে ৪ ভাগের ৩ ভাগ স্টুডেন্টকেই টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য দেখিয়ে ফরম ফিলাপ করতে দেওয়া হয় না। কেবলমাত্র যেই স্টুডেন্টের ব্যাপারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হয় যে, ওমুক স্টুডেন্ট এ প্লাস পাবে, শুধুমাত্র তাকেই ফরম ফিলাপ করিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়। আর বাকি স্টুডেন্ট এবং তাদের অভিভাবকদের জীবনে নেমে আসে অভাবনীয় হতাশা এবং দুর্ভোগ! সন্তানের জীবন থেকে চলে যায় মূল্যবান শিক্ষাবর্ষ। তখন ওই সকল অভিভাবক ছুটোছুটি করে নিম্নমানের নাম সর্বস্ব কোন স্কুল থেকে সন্তানকে ফরম ফিলাপ করিয়ে পরীক্ষা দেওয়ানো হয়? তখন সুযোগ সন্ধানী অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই সব অভিভাবকের কাছ থেকে মোটা অংকের ডোনেশন নিয়ে ঐ ছাত্রকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেয়। এবং পরবর্তীতে দেখা যায় ঐ নামীদামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে টেষ্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য স্টুডেন্টটি দুর্বল একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষা দিয়ে এ প্লাস না পেলেও ন্যূনতম A হলেও পায়। অথচ যেই প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ আট দশ বছর পড়াশোনা করেছে, এ প্লাস না পাওয়ার আশঙ্কায় তারা এই স্টুডেন্টকে টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য দেখিয়ে স্কুল থেকে টিসি ধরিয়ে দেয়। যে সকল অভিভাবক এত কষ্ট এবং অর্থ ব্যয় করে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্তানকে পড়াশোনা করিয়ে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রিয় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত হয়, তাদের বুকফাটা আর্তনাদ কেউ দেখেনা। এবং উক্ত স্টুডেন্টদের হতাশা দেখার কেউ নাই। শুধু তাই নয় ওই স্টুডেন্ট বাবা-মায়ের কাছ থেকে শুধু বোকা নয় মারও খেতে হয়, বন্ধু বান্ধব আত্মীয়-স্বজন প্রতিবেশীদের কাছে হতে হয় অপমানিত। লজ্জায় ঘৃণা এবং হতাশায় এই কোমলমতি অনেক শিক্ষার্থীর জীবনে শিক্ষা জীবন এখানেই শেষ হয়ে যায়। আমার জীবনে আমি এরকম বহু ঘটনা দেখেছি। শুধু ঢাকায় নয়, দেশের প্রতিটি এলাকায় প্রতিটি অঞ্চলে অনেক নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্টুডেন্টদের ও তাদের অভিভাবক কে এরকম পরিস্থিতির শিকার হতে হয়।
এই পোস্ট যারা পড়ছেন তাদের মধ্য থেকে নিজে অথবা আপনার চেনাজানা কারো মধ্য থেকে এই ধরনের পরওস্থিতির শিকার হয়ে থাকলে নিচে কমেন্ট করে এই পোস্ট শেয়ার করে এই ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে শামিল হোন। আমার বিশ্বাস প্রতিবাদ না করলে এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাচারিতা ক্রমাগত বেড়েই চলবে। কারণ এই বছর যে প্রতিষ্ঠানটি ৩২০ জনের মধ্যে ৩২০ জনই A প্লাস পেয়েছে, এটা নিয়ে ইতিমধ্যেই দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কানাঘুষা শুরু হয়ে গেছে। এবং আমার মনে হয় আগামীতে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের সকল স্টুডেন্ট কে এ প্লাস পাওয়া নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য দেখানো সংখ্যা বাড়িয়ে দেবে। যেই স্টুডেন্টটি এ প্লাস পাবেনা বলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ধারণা হবে, তাকেই পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করা থেকে বিরত রাখবে। এবং এভাবেই লক্ষ লক্ষ স্টুডেন্টের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করে তুলবে।
#sscresult #education #ধ্বনি #dhwonidiary #life
মতামত