অর্থনীতি

গত অর্থবছরে মোংলাবন্দরে অর্জিত সকল লক্ষ্যমাত্রা

প্রিন্ট
গত অর্থবছরে মোংলাবন্দরে অর্জিত সকল লক্ষ্যমাত্রা

প্রকাশিত : ১০ জুলাই ২০২৫

আরো সুদৃঢ় হচ্ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র মোংলা বন্দর। অর্থবছরের শুরুতেই ১৩০টি জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের মাধ্যমে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে যা মোংলা বন্দরের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ। এর আগে এই বন্দরে এক মাসে সর্বোচ্চ ৮০টি বিদেশি ও ৫০টি দেশি জাহাজ আসতো। গত বছরের একই সময়ে হ্যান্ডলিং হওয়া জাহাজের তুলনায় এটি ৩০ শতাংশ বেড়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বিষয়ক সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের যুগ্ম সচিব কাজী আবেদ হোসেন, সদস্য (অর্থ) সভাপতিত্ব করেন। এতে মুল উপস্থাপনা করেন প্রধান অর্থ ও হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মোঃ সিদ্দিকুর রহমান।

তিনি বলেন, নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বন্দরের সক্ষমতা বেড়েছে কয়েক গুণ। বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. মুসফিকুর রহমানের নেতৃত্বে বাস্তবায়ন হচ্ছে একের পর এক আধুনিক প্রকল্প। ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে গৃহীত হয়েছে নানা উদ্যোগ। MARPOL কনভেনশন অনুযায়ী প্রতিটি জাহাজের বর্জ্য নিরাপদে অপসারণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। রয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি, সিসিটিভি নজরদারি, প্রশিক্ষিত পাইলট ও নিরাপত্তাকর্মী।

বর্তমানে ৮টি চ্যানেলে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ হ্যান্ডলিং সম্ভব হচ্ছে। ইনারবার ড্রেজিং প্রকল্প, নতুন জেটি নির্মাণ ও ০.৬ কিমি দীর্ঘ ইয়ার্ড সংযোজনের কাজ চলমান।

এ মাসেই বন্দরে হ্যান্ডলিং হয়েছে ৮,৮০৩টি কনটেইনার (বৃদ্ধি ৩০.৩২%) এবং ২,০০০টি গাড়ি (বৃদ্ধি ৬০%) যার ফলে রাজস্ব আয় দাঁড়িয়েছে ৩৩.৩০ কোটি টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ১৭.২৫% বেশি।

এ ছাড়া ইস্পাত হ্যান্ডলিং হয়েছে ৮৫,৭৬০ মেট্রিক টন এবং জ্বালানি ১,০৮,৫০০ টন। জুলাই মাসে আমদানি হয়েছে ১৩৪টি ব্র্যান্ডনিউ গাড়ি। বন্দরে রয়েছে ১৬টি কনটেইনার ইয়ার্ড, ২টি কার ইয়ার্ড, শেড ও ওয়্যারহাউজ মিলিয়ে ৮০ হাজার স্কোয়ার ফিটের বেশি সংরক্ষণ সুবিধা।

বন্দরের মাধ্যমে বর্তমানে খাদ্যশস্য, সার, গাড়ি, কেমিকেলসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি ও গার্মেন্টস, শাকসবজি, চামড়া ইত্যাদি রপ্তানি হচ্ছে। ভবিষ্যতে ড্রেজিং, চ্যানেল সম্প্রসারণ ও ড্রাই পোর্ট স্থাপনসহ আধুনিকায়নে নানা প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।

মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন উপপ্রধান অর্থ ও হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ মাহফুজুর রহমান, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক মোঃ মাকরুজ্জামান, বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক তরফদার রবিউল ইসলাম, মোংলা প্রেসক্লাব সভাপতি আহসান হাবিব হাসান সহ বন্দরের বিভিন্ন কর্মকর্তা বৃন্দ ও বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

দক্ষিণাঞ্চলের শিল্প, কৃষি ও জ্বালানিনির্ভর অর্থনীতির চালিকাশক্তি হয়ে উঠছে মোংলা বন্দর। সরকারের আধুনিকায়ন, নিরাপত্তা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির পদক্ষেপের ফলে বন্দরটি এখন শুধু দেশীয় নয়, আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র বন্দর হয়ে উঠতে চলেছে।