ঢাকা

গাজীপুরে মাদকসহ আটক করে উৎকোচের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ গাছা থানা পুলিশের বিরুদ্ধে

প্রিন্ট
গাজীপুরে মাদকসহ আটক করে উৎকোচের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ গাছা থানা পুলিশের বিরুদ্ধে

ছবি : গাজীপুরে মাদকসহ আটক করে উৎকোচের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ গাছা থানা পুলিশের বিরুদ্ধে


প্রকাশিত : ১৪ জুন ২০২৫

  • স্টাফ রিপোর্টার

গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানা এলাকায় মাদকসহ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে উৎকোচের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ গাছা থানা পুলিশের এএসআই আল মামুনের বিরুদ্ধে। গত বুধবার (১১ জুন) দুপুরে এঘটনা ঘটে। 


আটক হওয়া মাদক ব্যবসায়ী হলো- গাছা থানার ৩৭ নং ওয়ার্ডের কুনিয়া পাছর পশ্চিম পাড়া এলাকার জালালের ছেলে আতাউর। সে দীর্ঘদিন যাবত মাদক কারবার করে আসছে এবং একাধিক মাদক মামলার আসামী। 


জানা যায়, এএসআই আল মামুন সঙ্গীয় পুলিশ কনস্টেবল মনোয়ার ও সোর্স কানা শামীমসহ সাদা পোশাকে বড়বাড়ী কুনিয়া পাছর এলাকার ইঞ্জিনিয়ার রোডে অভিযানে যায়। এসময় আতাউরের দেহ তল্লাশী করে ৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক করা হয়। 


স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, আতাউর ইয়াবা ক্রয় বিক্রয় করার জন্যে ইঞ্জিনিয়ার রোডে দাড়িয়ে থাকাবস্থায় গুপ্তচর বা সোর্স কানা শামীমের সহায়তায় ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আতাউরকে আটক করে। আতাউরের পুরো পরিবারটি মাদক ব্যবসার সাথে দীর্ঘদিন যাবত জড়িত। তার ছোট ভাই ওয়াসিম ভয়ংকর সন্ত্রাসী ও অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রক। ৫ই আগস্টের পূর্বে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের আমলে স্থানীয় কাউন্সিলর ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতা জুয়েল মন্ডলের ছত্রছায়ায় আতাউরের পুরো পরিবারটি অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্নে পরিচালিত করত। মাদকসহ মাদক কারবারিকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে এই এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। পুলিশের নীতি বহির্ভূত কর্মকাণ্ডে এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক কারবার করতে আরো উৎসাহিত হচ্ছে। 


এবিষয়ে আটক হওয়া মাদক ব্যবসায়ী আতাউরের কাছে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে উনি জানান, পুলিশের এই এএসআই তাকে মোটরসাইকেলসহ আটক করে হাতকড়া পরিহিত অবস্থায় বড়বাড়ী গাছা রোডের মাথায় নিয়ে আসে। এসময় আতাউরের কাছ থেকে পুলিশ ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে ছেড়ে দেয়। 


স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, গ্রেফতার হওয়া মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে উৎকোচের বিনিময়ে মাদক কারবারি কে মাদক মামলা না দিয়ে, গ্রেফতারের সময় টাকা, মোবাইল, মাদক হিসেবে আলামত জব্দ না করে ছেড়ে দেওয়ায় পুলিশের প্রতি জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সেই সাথে পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের পুলিশের প্রতি আস্তা হ্রাস পেয়েছে। এর ফলে মাদক কারবারীরা মাদক ব্যবসা করতে আরো উৎসাহিত হবে। এধরণের অসৎ পুলিশ অফিসারদের কারণে দিন দিন পুলিশ বাহিনীর উজ্জ্বল ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। পুলিশের ভাবমূর্তি ফিরে আনতে পুলিশে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদারকি বৃদ্ধি করার দাবি স্থানীয়দের। এছাড়াও গত মঙ্গলবার (৩ জুন ২০২৪) গাছা এলাকার রফিকুলের ছেলে বাবু এবং নুরে আলমের ছেলে আল মাসুম রানা @ বিজয়কে মাদকসহ গ্রেফতার করে মাদক মামলা না দিয়ে জিএমপি অধ্যাদেশের ৭৮ ধারায় গাছা থানার ২০/২৫ নং ননএফআইআর প্রসিকিউশন দিয়ে আদালতে প্রেরণ করে। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুমন আসামীদের ১ হাজার টাকা জরিমানার দন্ড প্রদান করে। আসামীরা আদালতে জরিমানা দিয়ে মুক্তি পেয়ে নির্বিঘ্নে মাদক কারবার করছে। 


এঘটনার বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানার এএসআই আল-মামুনের কাছে জানতে চাইলে উনি ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে আতাউরসহ বাবু ও বিজয়কে গ্রেফতার করার বিষয়টি স্বীকার করেন। এমনকি আতাউরকে ছাড়ার সময় ভিডিও ধারণ করে রেখেছেন। 


এসংক্রান্তে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার লিয়াকত আকবর জানান, তদন্ত সাপেক্ষে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।