ছবি : ঐতিহ্যবাহী গরু-ছাগলের হাট বসেছে হারাগাছ পৌরসভা সংলগ্ন মাঠে
ঐতিহ্যবাহী গরু-ছাগলের হাট বসেছে হারাগাছ পৌরসভা সংলগ্ন মাঠে
কাউনিয়া উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ আইয়ুব আলী
ঈদুল আজহা সামনে রেখে রংপুরের হারাগাছ পৌরসভা সংলগ্ন মাঠে শুরু হয়েছে একটি ঐতিহ্যবাহী গরু-ছাগলের হাট। হাটটির আয়োজন করেছেন মোঃ আজিজুল ইসলাম গং। হাটে বসানো হয়েছে "সুখবর, সুখবর" স্লোগানে বিশাল আকৃতির এক ব্যানার, যেখানে দেশি উন্নত জাতের গরু ও ছাগলের ছবি দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। এই হাটটি এলাকাবাসীর কাছে একটি চেনা নাম, যা প্রতিবছর কুরবানির ঈদকে ঘিরে জমে ওঠে।
হাটে দেখা গেছে বিভিন্ন বয়স ও ওজনের দেশি গরু, সাঁড়, ছাগল ও খাসির ব্যাপক সমাহার। পীরগাছা, বদরগঞ্জ, কাউনিয়া, গঙ্গাচড়া, সৈয়দপুরসহ আশপাশের উপজেলা ও জেলা থেকে খামারিরা তাদের কুরবানির পশু নিয়ে এসেছেন এই হাটে। অনেকে আবার নিজের খামারে লালন-পালন করা গরু বা ছাগল এনে বিক্রি করছেন, যেগুলো সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাদ্যে বড় হয়েছে বলে দাবি করছেন বিক্রেতারা।
হাটে ক্রেতাদের জন্য বেশ কিছু সুবিধা রাখা হয়েছে। যেমন, পশু রাখার জন্য আলাদা করে তৈরি করা হয়েছে খাঁচা ও ঘেরা স্থান, রয়েছে অস্থায়ী পানি সরবরাহ ও পশু চিকিৎসা ব্যবস্থা। পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাট পরিচালনা কমিটি। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরাও হাটের আশপাশে নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, চলতি বছরের তুলনায় এবার পশুর সরবরাহ ভালো। তবে ক্রেতারা বলছেন, বড় গরুর দামের ক্ষেত্রে কিছুটা উর্ধ্বগতি রয়েছে। মাঝারি আকারের গরু ও ছাগলের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। গড়ে একটি মাঝারি গরুর দাম হাঁকানো হচ্ছে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা এবং একটি উন্নত জাতের ছাগলের দাম ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।
হাটে আগত এক ক্রেতা, শফিকুল ইসলাম বলেন, "প্রতিবছর এখান থেকেই কুরবানির গরু কিনি। এবারও বেশ কিছু ভালো পশু দেখলাম। দাম একটু বেশি, তবে গরুগুলোর মান ভালো।" অপরদিকে বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম জানান, "নিজের খামারের তিনটি গরু এনেছি। এখনো পর্যন্ত ভালো সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি ঈদের আগের দুই দিনে বিক্রি সবচেয়ে বেশি হবে।"
এই হাট চলবে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত। শেষ মুহূর্তে আরও বেশি পশু আসবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের পদচারণায় জমজমাট হয়ে উঠেছে হারাগাছের এই ঐতিহাসিক পশুর হাট, যা ইতোমধ্যেই ঈদ উদযাপনের অংশ হয়ে উঠেছে।
মতামত