বাগেরহাটের মোংলা বন্দরের বেসক্রিকে অবস্থানরত এমভি সেজুঁতি নামে বাণিজ্যিক জাহাজে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। দেশি অস্ত্রের মুখে জাহাজের ক্রু ও স্টাফদের জিম্মি এবং মারধর করে প্রায় ২২ লাখ টাকা মূল্যের বিভিন্ন মালামাল লুট করে নিয়েছে সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র। এ সময় মারধরে তিন ক্রু আহত হয়েছেন। সোমবার ভোররাতে বন্দর চ্যানেলের (পশুর নদী) বেসক্রিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট আল সাফা শিপিং লাইন্সের খুলনার ম্যানেজার শরিফ জাহিদুল করিম অমিত জানান, বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান পিএনএন শিপিং লাইন্সের মালিকানাধীন এমভি সেজুঁতি ভারত থেকে পাথরবোঝাই করে গত বছরের ২২ জুন মোংলা সমুদ্র বন্দরের বেসক্রিক এলাকায় নোঙর করে পণ্য খালাস কাজ সম্পন্ন করে। বন্দরে অবস্থানকালে হঠাৎ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এ জাহাজটি প্রায় এক বছর ধরে বন্দর চ্যানেলে আটকে রয়েছে। এ জাহাজটিতে চিফ অফিসারসহ ৭ ক্রু ও স্টাফ রয়েছে। বন্দর চ্যানেলে থাকা এ জাহাজটিতে সোমবার ভোররাতে একটি ফিশি ট্রলারে করে দেশি অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হানা দেয় ১৪ জনের একটি ডাকাত দল। এ সময় নাবিকদের দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডব চালায় ডাকাত দলের সদস্যরা।
এ সময় ডাকাতরা জাহাজের পণ্য খালাসে ব্যবহৃত গ্রাফস্ট, জাহাজ বাঁধার ওয়্যার রোপ, ইঞ্জিনে ব্যবহৃত বিয়ারিং, বিপুল পরিমাণ জ্বালালি তেল, মোবিল ও রসদসহ বিভিন্ন ধরনের মালমাল লুটে নেয়। এ ছাড়া নাবিকদের ব্যবহৃত সাতটি মোবাইল ফোনও কেড়ে নেয় তারা। সশস্ত্র ডাকাতদের মারধরে জাহাজের তিন স্টাফ আহত হন। তাদের শিপিং এজেন্টের সহায়তায় প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মোংলা বন্দর চ্যানেলে থাকা এ জাহাজটিতে এ নিয়ে তিন দফায় ডাকাতরা হানা দিয়ে লুটপাট চালালো। সর্বশেষ সোমবার ভোররাতে জাহাজের প্রায় ২২ লাখ টাকার মালামাল অস্ত্রের মুখে লুট করে ডাকাতরা। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ ও কোস্ট গার্ডসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা (ঢাকা) লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন অর রশীদ বলেন, কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার ও ডাকাত দলকে ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে।’
এদিকে, বন্দর চ্যানেলে থাকা বাণিজ্যিক জাহাজে ডাকাতির প্রসঙ্গে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (বোর্ড ও জনসংযোগ বিভাগ) মো. মাকরুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি শুনেছি, খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
মতামত