রাত গভীর, মা আজও নির্ঘুম, ছেলের অপেক্ষায়,
জানালার গ্রিল ধরে স্থির দু\'চোখ, আঁধারের পথে চেয়ে।
বুকের ভেতর সহস্র শঙ্কার যানজট ছিড়ে যদি ছেলে আসে ফিরে।
মনের মাঝে কালবৈশাখী ঝড় এলোমেলো সব চিন্তা
অভিশপ্ত নেশার ছোবল,
কোথায়, কেমন আছে সে? বিষাক্ত ধোঁয়ায় ঢেকেছে কি তার সকল বোধ বিকল?
ধ্বংসের কোন অতল গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছে আদরের ধন,
চোখের সামনেই তিলে তিলে শেষ, মা যে বড় অসহায়, কাঁদে শুধু মন।
অজানা আশঙ্কায় হৃৎপিণ্ডটা লাফিয়ে ওঠে, নিঃশ্বাস হয় ভারী,
একটু শব্দেই চমকে ওঠা, এই বুঝি এলো বিপদ কোনো, অতি তাড়াতাড়ি!
ঘরের কোণে খাবার ঢাকা, যদি ফিরে বলে, \'মা, খিদে পেয়েছে \'
সেই চেনা ডাক, সেই মুখের আদল, নেশার কালিতে গেছে কি সব মুছে?
কপালের ঘাম, ঠোঁটে শুকিয়ে যাওয়া প্রার্থনা, দু\\'চোখে জলের ধারা,
এই বুঝি শেষ দেখা, এই বুঝি সব হারানো – ভয়েতে আত্মহারা।
পাতার মর্মরে, কুকুরের ডাকে, কেবলই ভ্রান্ত আশা ফিরে ফিরে যায়,
নেশার ঘোরে বিকৃত মুখচ্ছবি, দেখেও কি না দেখার ভান করে থাকা যায়?
অস্থির পায়চারি বারান্দা থেকে ঘরে, সময় যেন হয়েছে পাথর,
ভেতরটা পুড়ে ছাই, এ কোন সর্বনাশা জ্বালা, এ কোন কষ্টের প্রহর!
হে ঈশ্বর, ফিরিয়ে দাও তাকে, ছিঁড়ে আনো ঐ শয়তানের জাল থেকে,
আমার মানিক, আমার সোনা, ফিরুক আবার মায়ের চেনা ডাকে।
কষ্টের এই নির্মম ঝড় তোলপাড় করে, বুকের পাঁজর ভেঙে দিতে চায়,
রাত বাড়ে, মায়ের চোখের জল শুকায় না, অপেক্ষার শেষ কোথায়?
মতামত